এক খণ্ড ভূমি জরিপে শিকল জরিপ পরিচালনার ব্যবহারিক পাঠ দেখবো আজ। এই পাঠটি সার্ভেয়িং ১ এর একটি পাঠ।
Table of Contents
এক খণ্ড ভূমি জরিপে শিকল জরিপ পরিচালনা
শিকল দৈর্ঘ্য পরিমাপক যন্ত্র। আর শিকল জরিপে শুধুমাত্র বাহু দৈর্ঘ্যই পরিমাপ করা হয়। যেহেতু জ্যমিতিক চিত্রগুলোর মধ্যে শুধুমাত্র ত্রিভুজেরই বাহু দৈর্ঘ্য জানা থাকলে এর অঙ্কন, ক্ষেত্রফল নিরূপণ, বিশুদ্ধতা যাচাইকরণ ইত্যাদি করা যায়, তাই শিকল জরিপের মূলনীতি হলো ত্রিভুজায়ন। তা ছাড়া শিকল জরিপ পরিচালনায়ও অন্যান্য জরিপের মতো জরিপ পরিচালনার নীতিগুলো মেনে চলা । হয়। জরিপ পরিচালনার অন্যতম নীতিগুলো হলো— জরিপের কাজ আস্ত হতে অংশের দিকে করা, যাচাই বা নিরীক্ষার সুযোগ রাখা, জরিপ কাজে সর্বোত্তম প্রক্রিয়া অনুসরণ করা, সরজমিনে নিখুঁতভাবে তথ্য নেয়া ও সতর্কতার সাথে তথ্যাদি লিপিবদ্ধ করা ইত্যাদি
শিকল জরিপ পরিচালনায় সাধারণত নিম্নোক্ত ধাপগুলো অনুসরণ করা হয় :
(১) প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ (Reconnaissance) জরিপ
(২) ভিত্তি রেখা নির্বাচন, স্টেশন বিন্দু নির্বাচন ও চিহ্নিতকরণ (৩) জরিপ রেখা, অফসেট, যাচাই রেখা মাপন, বিস্তারিত তথ্যাদি নেয়া ও জরিপলিপিতে লেখন। মূলত উপরোক্ত কার্যাদির সবগুলোই মাঠের কাজ (field work)।
যন্ত্রপাতি :
১। শিকল – 1 টি
২। টেপ
৪ । রেঞ্জিং রড
৩। ঝাণ্ডি
৫। অপটিক্যাল স্কয়ার
৬। অ্যারো
৭। জরিপলিপি
৮। পেন্সিল
৯ । ইরেজার
১০। ওলন
১১ । হাতুড়ি
১২। কোদাল, কুঠার, দা ইত্যাদি।
কাজের ধারা :
১। জরিপতব্য এলাকা সরজমিনে পর্যবেক্ষণ করে খসড়া পর্যবেক্ষণ নকশা তৈরি করতে হবে।
২। পর্যবেক্ষণ নকশার উপর ভিত্তি করে জরিপতব্য এলাকার আনুকূল্যে সমতল ভূমিতে দৈর্ঘ্য বরাবর একটি এবং সম্ভব হলে প্রস্থ বরাবর একটি ভিত্তি রেখা নির্বাচন করতে হবে এবং এ ভিত্তি রেখার উপর প্রধান ত্রিভুজ কাঠামোর জন্য নিয়মতান্ত্রিকভাবে স্টেশন বিন্দু নির্বাচন করতে হবে। 10 নির্বাচিত স্টেশনগুলো চিহ্নিত করতে হবে এবং এগুলোর নামকরণ বর্ণে (A, B, C, D ইত্যাদি) বা সংখ্যায় (1, 2, 3 ইত্যাদি) চিহ্নিত করতে হবে।
8| পরিমাপকালে রেঞ্জিং করার সুবিধার্থে সহজ পরিদৃশ্যতার জন্য ভিত্তি রেখার প্রান্তীয় স্টেশনদ্বয়ে এবং অধিক দৈর্ঘ্যের বাহুগুলোর প্রান্তীয় স্টেশনে ঝাত্তি এবং অন্যান্য বাহুগুলোর প্রান্তীয় স্টেশনে উল্লম্বভাবে রেঞ্জিং রড পুঁততে হবে।
৫। বৃহৎ ত্রিভুজগুলোর যাচাই রেখার মাপ অবশ্যই নিতে হবে এবং অন্যান্য ত্রিভুজগুলোর যাচাই রেখার মাপ নেয়া শ্রেয়।
৬। বিস্তারিত তথ্যাদি সংগ্রহকালে দীর্ঘ অফসেট (long offset) পরিহারের জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক গ্রন্থি রেখা নিতে হবে।
৭। শিকল রেখা পরিমাপকালে শিকলে মাপ নেয়ার জন্য 2 জন (অগ্রগামী ও অনুগামী), অফসেট এর মাপ নেয়ার জন্য 2 জন এবং জরিপলিপি লেখার জন্য ১ জন মোট ১জন অভিজ্ঞ লোকের মাধ্যমে যথাযথ নিয়মে শিকল রেখার মাপ নিয়ে জরিপলিপিতে যথানিয়মে লেখার কাজ করতে হবে।
৮। প্রতি শিকল মাপ নেয়ার পূর্বে যথানিয়মে সতর্কতার সাথে পংক্তিকরণের কাজ করে শিকলের মাপ ও অফসেট নেয়ার কাজ এবং অগ্রগামীমুখী হয়ে জরিপলিপিতে ডানের অফসেট ডানে ও বামের আফসেট বামে চেইনেজসহ লেখতে হবে।
৯। এক শিকল দৈর্ঘ্যের সকল তথ্যাদি (অফসেট, চেইনেজ ইত্যাদি) লিপিবদ্ধ করার পর পরবর্তী শিকল মাপার জন্য প্রয়োজনীয় পংক্তিকরণের কাজ করে পরবর্তী শিকল মাপা অফসেট নেয়া ইত্যাদি কাজ করতে হবে।
১০। জরিপলিপির প্রতি পৃষ্ঠা শুধুমাত্র একটি রেখার পরিমাপ তথ্যাদি লেখতে হবে তবে এক পৃষ্ঠায় সংকুলান না হলে পরবর্তী পৃষ্ঠায় নেয়া যাবে। কিন্তু দু’টি রেখার তথ্যাদি জরিপলিপির এক পৃষ্ঠায় লেখা যাবে না ।
১১। একটি রেখার পরিমাপ সম্পূর্ণ, যথার্থ ও নিখুঁতভাবে সমাপ্ত করার পর ধারাবাহিক পরবর্তী রেখার মাপ নিতে হবে।
১২। প্রত্যেক স্টেশনে মিলিত বাহুগুলোর পরিচিতিসহ ঐ স্টেশনে প্রদর্শন করতে হবে।
সতর্কতা :
১। ত্রিভুজ কাঠামো গঠনকালে ত্রিভুজগুলো সুঠাম ত্রিভুজ হওয়া বাঞ্ছনীয় ।
২। ভিত্তি রেখার পরিমাপ নিখুঁত হওয়ার জন্য এটা একাধিকবার মাপতে হবে।
৩। রেঞ্জিং রড, ঝাণ্ডি উল্লম্বভাবে পুঁততে হবে। ৪। লং অফসেট পরিহার করতে হবে।
৫। প্রতিটি অফসেট এর ক্ষেত্রে চেইনেজের উদ্ধৃতি অত্যাবশ্যক।
৬। অফসেট এর মাপ নেয়ার ক্ষেত্রে 5 সেমি (½ ডেসিমিটার) এর কম বাদযোগ্য এবং ৫ সেমি (½ ডেসিমিটার) এর অধিক হলে ১০ সেমি (১ ডেসিমিটার) লেখার নিয়ম আছে।
আরও দেখুন: