জরিপের প্রাথমিক শ্রেণিবিভাগ – পাঠটি “সার্ভেয়িং ১” জরিপের ধারণা ” বিভাগ এর একটি পাঠ । গুণগত মান এবং ব্যবহার ও প্রয়োগ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে আকাশ চিত্র ও উপগ্রহ চিত্র গবেষণার কাজে বেশী ব্যবহৃত হলেও এতে উপস্থাপিত তথ্যাদি অনেক সময় যাচাইয়ের তাগিদে ভ‚মি-জরিপ প্রয়োজন হয়ে থাকে।
জরিপের প্রাথমিক শ্রেণিবিভাগ
প্রাথমিকভাবে জরিপকে দু’ভাগে ভাগ করা যায়, যথা—
১। ভূমণ্ডলীয় জরিপ (Geodetic survey)
২। সমতলীয় জরিপ (Plane Survey)।
১। ভূমণ্ডলীয় জরিপ ঃ
ভূমণ্ডলীয় বা বক্রতলিক জরিপে পৃথিবীর বক্রতাকে বিবেচনা করে সুবৃহৎ পরিসরে বিভিন্ন বিন্দুর পরম অবস্থান নির্ণয় করা হয়। এতে সৃষ্ট ত্রিভুজগুলো স্ফেরিক্যাল (Spherical) ত্রিভুজ এবং এগুলোর হিসাবনিকাশে স্ফেরিক্যাল ত্রিকোণমিতি ব্যবহার করা হয়। এ ধরনের জরিপ শুধুমাত্র সরকারি সংস্থার মাধ্যমেই করা সম্ভব। ভূমণ্ডলীয় ‘জরিপের প্রধান বৈশিষ্টগুলো হচ্ছে— (১) সুদীর্ঘ দূরত্ব ও সুবৃহৎ এলাকার জন্য উপযোগী। (২) এতে খুব সূক্ষ্ম, অতিশয় নিখুঁত, উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন যন্ত্র ব্যবহৃত হয়। (৩) এতে পরিদর্শন (observation) ও সমন্বয়ে (Adjustment) নিখুঁত প্রক্রিয়া প্রয়োগ করা হয়। (৪) এতে সূক্ষ্মতার মাত্রা অত্যধিক ও (৫) এতে ওলন রেখাকে গড় সমুদ্রতলের (M.S.L) সাথে লম্ব ধরা হয়।
২। সমতলীয় জরিপ : সমতলীয় বা স্বল্প পরিসরের জরিপে ভূপৃষ্ঠের বক্রতাকে বিবেচনা করা হয় না। যেহেতু স্বল্প পরিসর জরিপে এ পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়, তাই দু’ বিন্দুর দূরত্বকে সরল রেখা হিসেবে বিবেচনা করা হয় এবং বহুভুজের কোণগুলোকে সমতলীয় – কোণ হিসেবে ধরা হয়। এতে সাধারণ জ্যামিতির বা ত্রিকোণমিতির সূত্রাদি প্রয়োগ করা হয়। এতে বিভিন্ন বিন্দুর ওলন রেখাকে সমান্তরাল ধরা হয়। আমেরিকান জরিপকরদের মতে, 260 বর্গকিলোমিটারের কম পরিসরের জন্য সমতলীয় জরিপ করা বিধিসম্মত । এ জরিপ বিন্দুসমূহের আপেক্ষিক অবস্থান নির্ণয়ে ব্যবহৃত হয়।

পৃথিবীর বক্রতাজনিত কারণে জ্যা ও বৃত্তচাপের হিসেবে দেখা যায় যে, 18.2 কিমি-এর জন্য 0.1 মি., 54.5 কিমি-এর জন্য 0.3 মি. এবং 91 কিমি-এর জন্য 0.5 মি. পার্থক্য হয় এবং 195.5 কণে বর্গকিলোমিটার ক্ষেত্রফলের স্পেরিক্যাল ত্রিভুজ ও সমতলীয় ত্রিভুজের কোণের ব্যবধান 1 সেকেন্ড ।
আরও দেখুন: