প্লেন টেবিল জরিপ পদ্ধতি

প্লেন টেবিল জরিপ পদ্ধতি – নিয়ে আজকের আলোচনা। এই পাঠটি “সার্ভেয়িং ১” এর “প্লেন টেবিল জরিপের মৌলিক ধারণা” পাঠ এর অংশ।

প্লেন টেবিল জরিপ পদ্ধতি | প্লেন টেবিল জরিপের মৌলিক ধারণা | সার্ভেয়িং ১

প্লেন টেবিল জরিপ পদ্ধতি

 

প্লেন টেবিল জরিপ প্রতিসাম্য, সমান্তরাল সমানুপাতিক নীতির উপর প্রতিষ্ঠিত নিচের চারটি পদ্ধতিতে প্লেন টেবিল জরিপ করা যায়, যথা—

প্লেন টেবিল জরিপের চার পদ্ধতি:

১। রেডিয়েশন (Radiation)

২। ইন্টারসেকশন (Intersection)

৩। ট্র্যাভার্সিং (Traversing) ও

৪। রিসেকশন (Resection)।

উপরোক্ত পদ্ধতিগুলো ক্ষেত্রবিশেষে প্রয়োগ করতে হয়। যেমন— যখন স্টেশনগুলোতে যাওয়া যায়, পার্শ্ববর্তী স্টেশন হতে অন্যান্য স্টেশনগুলো দেখা যায় না কিন্তু মাঠের মাঝামাঝি কোনো স্থান হতে সকল স্টেশনই দেখা যায়, তখন রেডিয়েশন বা বিকিরণ পদ্ধতিতে জরিপ করে নকশা প্রণয়ন করা যায় ।

 

প্লেন টেবিল জরিপ পদ্ধতি | প্লেন টেবিল জরিপের মৌলিক ধারণা | সার্ভেয়িং ১

 

আবার যখন সব কয়টি স্টেশন ভিত্তি রেখাস্থ স্টেশন হতে দেখা যায় এবং অন্যান্য স্টেশনগুলোতে যাওয়া যায় না এরূপ ক্ষেত্রে ইনটারসেকশন বা ছেদন পদ্ধতিতে জরিপ করা যায়। পাহাড়িয়া অঞ্চলে সাধারণ দূরত্বের বাইরের কোনো বস্তুকে নকশায় উঠাতে এ পদ্ধতি বিশেষভাবে উপযোগী । আবার যখন স্টেশনগুলোর প্রত্যেকটি হতেই তার অগ্র ও পশ্চাৎ স্টেশন দেখা যায়, প্রত্যেকটি স্টেশনেই যাওয়া যায়, এলাকার পরিসরও ছোট এবং স্কেলও বড় এরূপ ক্ষেত্রে ট্র্যাভার্সিং বা ঘের পদ্ধতিতে জরিপ করা সহজসাধ্য।

প্লেন টেবিল জরিপের উদ্দেশ্য ও আওতা
আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

আবার যখন সব স্টেশনে যাওয়া যায় এবং প্রত্যেক স্টেশন হতে দুই বা ততোধিক স্টেশন দেখা যায়, তখন রিসেকশন বা পুনশ্ছেদন পদ্ধতিতে জরিপ করা যায় ।

জরিপ বা ভূমি জরিপ হল স্থলজগতের দ্বি-মাত্রিক বা ত্রি-মাত্রিক বিন্দুর অবস্থান এবং তাদের মধ্যকার দূরত্ব ও কোণ নির্ধারণের কৌশল, পেশা, শিল্প এবং বিজ্ঞান। একজন ভূমি জরিপকারী পেশাদারকে ভূমি জরিপকারী বলা হয়। এই বিন্দুগুলি সাধারণত পৃথিবীর পৃষ্ঠে থাকে এবং এগুলি প্রায়শই মালিকানা, অবস্থানের জন্য মানচিত্র এবং সীমানা স্থাপন করতে ব্যবহৃত হয়, যেমন নির্মাণের জন্য কাঠামোগত উপাদানগুলির পরিকল্পিত অবস্থান বা ভূপৃষ্ঠের বৈশিষ্ট্যগুলির পৃষ্ঠের অবস্থান, বা সরকার কর্তৃক প্রয়োজনীয় অন্যান্য উদ্দেশ্যে। বা নাগরিক আইন, যেমন সম্পত্তি বিক্রয়।

 

প্লেন টেবিল জরিপের ( Plane Table Surveying ) এর সুবিধা ও অসুবিধা:

প্লেন টেবিলের সুবিধাগুলো দেওয়া হলোঃ

১। যেহেতু প্লেন টেবিল জরিপের নকশা সরজমিনেই করা হয়, তাই এতে কোন তথ্য বাদ পড়ার সম্ভাবনা থাকে না।

২। জরিপকর মাঠে সরাসরি নকশায় অঙ্কিত তথ্যাদি যাচাই করে নিতে পারে।

৩। যেহেতু জরিপতব্য এলাকা জরিপকরের দৃষ্টির সামনেই থাকে, তাই সহজেই বস্তুর সঠিক অবস্থান (নিয়মিত বা অনিয়মিত) নকশায় সন্নিবেশ করা যায়।

৪। এতে সরাসরি পরিমাপ গ্রহণের দরকার পড়ে না।

৫। এতে জরিপ লিপি লেখার দরকার পড়ে না, তাই ভ্রান্তির পরিমাণ হ্রাস পায়।

৬। চুম্বক আকর্ষিত এলাকার জন্য এটা বেশ উপযোগী।

৭। থিওডোলাইট ও অন্যান্য জরিপ অপেক্ষা এটা বেশ সহজ সরল।

৮। এতে খরচের পরিমাণও কম।

৯। ছোট স্কেলের নকশার জন্য এটা বিশেষ উপযোগী।

১০। এটার নকশা প্রণয়নে দাপ্তরিক কাজের দরকার পড়ে না, তাই সময় ও কম লাগে।

১১। এ জরিপের জন্য অত্যাধিক জরিপকরের দরকার পড়ে না।

১২। এ জরিপে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতির জটিলতা কম এবং সমন্নয়েও অধিক সময় দরকার হয় না।

১৩। সরাসরি পরিমাপ গ্রহণ করতে হয় না, বিধায় বন্ধুর ও পার্বত্য এলাকায় সহজে এ জরিপ করা যায়।

 

নিচে প্লেন টেবিলের অসুবিধাগুলো দেওয়া হলোঃ

১। বৃষ্টিপাত ও আদ্র আবহাওয়ায় জরিপ কাজ করা যায় না।

২। যেহেতু পরিমাপের কোন জরিপ বই থাকে না, ফলে পুনঃ নকশা প্রণয়ন, নকশার সংকোচন বা পরিবর্ধন করা কষ্টসাধ্য।

৩। এ জরিপে নিখুঁত ফলাফল পাওয়া যায় না।

৪। প্রতিবন্ধকতা পূর্ণ এলাকায় জরিপ করা কষ্টকর।

৫। এ জরিপের সব কাজ মাঠে সমাধা করতে হয় বিধায় রোদে কষ্টকর অবস্থায় পড়তে হয় এবং চোখ ঝলসে যায়, ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

৬। এতে যন্ত্রপাতি স্থানান্তর ও বহনে ঝামেলায় পড়তে হয়।

৭। অনেকগুলো ছোটখাট যন্ত্রপাতি ব্যবহার করতে হয় বিধায় এগুলো হারিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

৮। সীমিত আকারের ড্রয়িংসীট ব্যবহার করে জরিপ করা হয় বিধায় নতুন সীট সংযোগ করা ঝামেলা পূর্ণ।

 

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment