পুঞ্জীভূত ও ক্ষতিপূরক ভ্রান্তি এর ব্যবহারিক পাঠ দেখবো আজ। এই পাঠটি সার্ভেয়িং ১ এর “শিকল জরিপের ভুলভ্রান্তি” বিষয়ের একটি পাঠ।
Table of Contents
পুঞ্জীভূত ও ক্ষতিপূরক ভ্রান্তি
পুঞ্জীভূত ভ্রান্তি :
জরিপকালে যদি শিকলের দৈর্ঘ্য শুধুমাত্র অতিরিক্ত লম্বা (too long) অথবা শুধুমাত্র অতিরিক্ত খাটো হতে থাকে, তখন পরিমাপের ভ্রান্তিকে পুঞ্জীভূত ভ্রান্তি বলে। অর্থাৎ শিকল লম্বা হলে শুধু লম্বাই হয়, খাটো হয় না অথবা শিকল খাটো হলে শুধু খাটোই হয় লম্বা হয় না, তখনই পুঞ্জীভূত ভ্রান্তি দেখা দেয়। এ ধরনের ভ্রান্তি দু’ প্রকারের, যথা— ক) ধনাত্মক ভ্রান্তি ও খ) ঋণাত্মক ভ্ৰান্তি
(ক) ধনাত্মক পুঞ্জীভূত ভ্রান্তি :
যখন পরিমাপকৃত ফলাফল প্রকৃত ফলাফলের অধিক হয় অর্থাৎ শিকল যদি খাটো হতে থাকে, তখনই ধনাত্মক পুঞ্জীভূত ভ্রান্তি দেখা দেয় ।
সাধারণত নিম্নোক্ত কারণে এ ধরনের ভ্রান্তি সৃষ্টি হয় :
১। শিকলের লিংক বেঁকে গেলে ।
২। সংযোগকারী রিংগুলোতে গিরা (Knot) লেগে গেলে ।
৩। শিকল নিরীক্ষাকালে দু-একটা রিং বেশি বাদ দেয়া হলে ।
৪। শৈত্যে শিকল সংকুচিত হলে।
৫। ঢালু এলাকায় শিকল অনুভূমিকভাবে না রেখে মাপলে ।
৬। ঢালের জন্য প্রয়োজনীয় সংশোধনী (Slope correction) না করলে।
৭। ঝুলে (sag) থাকা অবস্থায় শিকলে পরিমাপ নিলে ।
৮ । ঝুলে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় সংশোধনী (Sag correction) না করলে ৯। পঙক্তিকরণ না করে রেখার দৈর্ঘ্য মাপলে ।
১০। স্বাভাবিক টানের চেয়ে কম টানে শিকল ঢিলা করে মাপলে ।

(খ) ঋণাত্মক পুঞ্জীভূত ভ্রান্তি :
যখন পরিমাপকৃত ফলাফল প্রকৃত ফলাফল হতে কম হয়, অর্থাৎ শিকল যদি লম্বাই হতে থাকে, তখনই ঋণাত্মক পুঞ্জীভূত ভ্রান্তি দেখা দেয়।
সাধারণত নিম্নোক্ত কারণে এ ধরনের ভ্রান্তির সৃষ্টি হয় :
১। শিকলের রিংগুলোর জোড়া ফাঁক হয়ে গেলে ।
২। শিকলের কোন রিং বা রিংগুলো চেপ্টা হয়ে গেলে ।
৩। শিকলের লিংকগুলোর প্রান্ত ফাঁক বা অধিকতর চেপ্টা হয়ে গেলে ।
৪ । তাপমাত্রার আধিক্যে শিকলের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি পেলে ।
৫। শিকল নিরীক্ষার সময় অতিরিক্ত রিং সংযোগ করলে ।
৬। অত্যধিক টানে শিকলের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি পেলে।
৭। শিকলের হাতলে দৈর্ঘ্যের দিকে চাপের দরুন শিকল লম্বা হলে।
* পুঞ্জীভূত ভ্রান্তি অংক কষে সংশোধন করা যায় ।
ক্ষতিপূরক ভ্রান্তি :
জরিপকালে শিকলের (ফিতার) দৈর্ঘ্য যদি একবার বাড়ে আবার কমে অথবা একবার কমে আবার বাড়ে তাহলে এ ধরনের ভ্রান্তিকে ক্ষতিপূরক ভ্রান্তি বলা হয়। এ ধরনের ভ্রান্তি পরিমাপে বৃহৎ ধরনের কোনো প্রভাব ফেলে না, যেহেতু পর্যায়ক্রমিক হ্রাস-বৃদ্ধি ভ্রান্তিকে সমতার কাছাকাছি নিয়ে আসে। এগুলোকে দুর্ঘটনামূলক ভ্রান্তিও বলা হয়। সাধারণত নিম্নোক্ত কারণে এ ধরনের ভ্রান্তি সৃষ্টি হয় :
১। শিকলের প্রান্ত বিন্দুকে সঠিকভাবে চিহ্নিত না করলে অগ্রগামী একবার তীর শিকলের হাতলের ভিতরে আবার বাইরে বসালে ।
২। অনুগামী শিকলের হাতল একবার চিহ্নিত স্থানের পিছনে আবার সামনে বসালে ।
৩। একবার কম টানে ঢিলা অবস্থায় আবার অধিক টানে শিকলের প্রান্তে তীর বসালে।
৪। ধাপ পদ্ধতিতে শিকল জরিপকালে ওলন ব্যবহার না করে শিকলের প্রান্ত চিহ্নিত করলে (পাথর বা মাটির টুকরা ব্যবহার করে)।
৫। জরিপকালে তাপমাত্রার আধিক্য ও শৈত্যতা দেখা দিলে ।
* পুঞ্জীভূত ভ্রান্তি পরিমাপকৃত জরিপ রেখার দৈর্ঘ্যের (L) সমানুপাতিক এবং ক্ষতিপূরক ভ্রান্তি জরিপকৃত জরিপ রেখার দৈর্ঘ্যের বর্গমূলের (√L) সমানুপাতিক। এসব ভ্রান্তি বিভিন্ন হিসাবের মাধ্যমে সংশোধন করা যায়।
আরও দেখুন: