নিয়মিত ও অনিয়মিত পরিসীমা বিশিষ্ট ক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল নিরূপণের বিভিন্ন পদ্ধতি

নিয়মিত ও অনিয়মিত পরিসীমা বিশিষ্ট ক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল নিরূপণের বিভিন্ন পদ্ধতি – নিয়ে আজকের আলোচনা। এই পাঠটি “সার্ভেয়িং ১ ” বিষয়ের “ক্ষেত্রফল নিরূপণের বিভিন্ন পদ্ধতি” বিভাগের একটি পাঠ |

নিয়মিত ও অনিয়মিত পরিসীমা বিশিষ্ট ক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল নিরূপণের বিভিন্ন পদ্ধতি

নিয়মিত ও অনিয়মিত পরিসীমা বিশিষ্ট ক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল নিরূপণের বিভিন্ন পদ্ধতি | ক্ষেত্রফল নিরূপণের বিভিন্ন পদ্ধতি | সার্ভেয়িং ১

 

ক্ষেত্রফল নিরূপণের জন্য সাধারণত দু’টি পদ্ধতির প্রয়োগ দেখা যায়—

(১) সরাসরি ফিল্ড নোট হতে ক্ষেত্রফল নিরূপণ ও (২) নক্শা হতে ক্ষেত্রফল নিরূপণ।

এখানে প্রথমে সরাসরি ফিল্ড নোট (Field note) হতে ক্ষেত্রফল নিরূপণের বিভিন্ন পদ্ধতির নাম ও কয়েকটির বর্ণনা দেয়া হলো :

(ক) পুরো ক্ষেত্রকে ত্রিভুজ কাঠামোতে বিভক্ত করে

(খ) ভিত্তি রেখার সাথে অফসেট নিয়ে (গ) অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশের মাধ্যমে

১। দুই দ্রাঘিমাংশের দূরত্বের মাধ্যমে (D.M.D)

২। দুই সমান্তরাল দূরত্বের মাধ্যমে (D.P.D)

(ঘ) স্থানাঙ্কের মাধ্যমে।

(ক) ত্রিভুজে বিভক্ত করে ঃ

এতে পুরো ক্ষেত্রকে ত্রিভুজ কাঠামোতে (Triangle skeletons) বিভক্ত করে প্রত্যেকটি ত্রিভুজের প্রত্যেকটি বাহুর পরিমাপ নেয়া হয় এবং জ্যামিতিক সূত্রের সাহায্যে ক্ষেত্রফল নির্ণয় করা হয়। এ সময় ত্রিভুজের ভিতরে সীমান্ত রেখা পড়লে অনিয়মিত অংশের ক্ষেত্রফল বাদ এবং ত্রিভূজের বাইরে পড়লে যোগ করতে হয়। ab চিত্রের (১১.১) (1) নং ত্রিভুজটি সমকোণী ত্রিভুজ। এটার ক্ষেত্রফল = . আবার (3) নং ত্রিভুজটি বিষমবাহু ত্রিভুজ এটার ক্ষেত্রফল = V/s (s-p) (sq) (s-r) এখানে a, b, c ও p,q, r ত্রিভুজের বাহুর দৈর্ঘ্য এবং s =(খ) ভিত্তি রেখার সাথে অফসেটের মাধ্যমে : সাধারণত সীমান্ত রেখার বিভিন্ন বিন্দু হতে ভিত্তি রেখার উপর অফসেট নিয়ে ক্ষেত্রফল নির্ণয় করা হয়। এক্ষেত্রে সাধারণত নিম্নোক্ত নিয়মে ক্ষেত্রফল বের করা হয়।

 

নিয়মিত ও অনিয়মিত পরিসীমা বিশিষ্ট ক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল নিরূপণের বিভিন্ন পদ্ধতি | ক্ষেত্রফল নিরূপণের বিভিন্ন পদ্ধতি | সার্ভেয়িং ১

 

১। মধ্য কোটি নিয়ম (Mid ordinate rule)

২। গড় কোটি নিয়ম (Average ordinate rule)

নিয়মিত ও অনিয়মিত পরিসীমা বিশিষ্ট ক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল নিরূপণের বিভিন্ন পদ্ধতি | ক্ষেত্রফল নিরূপণের বিভিন্ন পদ্ধতি | সার্ভেয়িং ১

 

২। গড় কোটি নিয়ম :

এই নিয়মেও ধরা হয় যে, প্রতিটি অফসেটের মধ্যবর্তী স্থান (সীমান্তে) সোজা রেখায় অবস্থান করে। এতেও মাঠে সরাসরি ভিত্তি রেখা হতে প্রতি ভাগের ভাগ বিন্দুতে অফসেট নেয়া হয়।

নিয়মিত ও অনিয়মিত পরিসীমা বিশিষ্ট ক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল নিরূপণের বিভিন্ন পদ্ধতি | ক্ষেত্রফল নিরূপণের বিভিন্ন পদ্ধতি | সার্ভেয়িং ১

৩। ট্রাপিজয়ডাল নিয়ম (Trapezoidal rule)

৪ । সিমসনের এক তৃতীয়াংশের নিয়ম (Simson’s one-third rule)।

 

১। মধ্য কোটি নিয়ম :

এ পদ্ধতিতে প্রতি ভাগের মধ্যবিন্দুতে কোটির মাপ নিয়ে ক্ষেত্রফল নির্ণয় করা হয়। এতে ধরা হয় যে,সীমান্তে প্রত্যেকটি অফসেটের মধ্যবর্তী স্থান সরল রেখায় অবস্থান করে। নিচের ১১.২ চিত্রের আলোকে এ ধরনের ক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল নির্ণয়ের পদ্ধতি দেখানো হল ।

O = ভিত্তি রেখার ভাগের শুরুর বিন্দুর কোটি O= ভিত্তি রেখার n ভাগের শেষ প্রান্তের কোটি

n+1

in = ভিত্তি রেখার ভাগ সংখ্যা

d = ভিত্তি রেখার প্রতি ভাগের দৈর্ঘ্য

L = ভিত্তি রেখার দৈর্ঘ্য = nd ৩। ট্রাপিজয়ডাল নিয়ম :

এক্ষেত্রে ধরে নেয়া হয় যে, চিত্রটি ট্রাপিজিয়ামের মতো। চিত্রঃ ১১.৩ এর আলোকে—

 

নিয়মিত ও অনিয়মিত পরিসীমা বিশিষ্ট ক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল নিরূপণের বিভিন্ন পদ্ধতি | ক্ষেত্রফল নিরূপণের বিভিন্ন পদ্ধতি | সার্ভেয়িং ১

৪। সিম্পসনের এক-তৃতীয়াংশের নিয়ম ঃ

এতে ধরা হয় যে, সীমান্তে কোটিগুলোর (Ordinates) মধ্যবর্তী দূরত্ব উপবৃত্তাকার। নিচের চিত্রের আলোকে (চিত্র ঃ ১১.৫) AB ভিত্তি রেখা ও DEC এর মধ্যবর্তী ক্ষেত্রফল, (১) ABCD ট্রাপিজিয়াম ও (২) DCF বৃত্তাংশের ক্ষেত্রফলের সমষ্টির সমান। ধরে নিই O, O2, O3, O,,—O, ইত্যাদি ধারাবাহিক কোটি। এখন DC যোগ করে F বিন্দু দিয়ে DC এর সমান্তরাল করে EFG টানি।

 

নিয়মিত ও অনিয়মিত পরিসীমা বিশিষ্ট ক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল নিরূপণের বিভিন্ন পদ্ধতি | ক্ষেত্রফল নিরূপণের বিভিন্ন পদ্ধতি | সার্ভেয়িং ১

 

এখানে এ ধারণা সুস্পষ্ট যে, এ নিয়মটি তখনই ব্যবহার করা যাবে যখন ভাগ সংখ্যা (n-1) জোড় ও কোটি সংখ্যা (n) বিজোড় সংখ্যক হবে এবং কোটিগুলো ধারাবাহিকভাবে সমদূরত্বে নেয়া হবে। সিমসনের এক-তৃতীয়াংশের সূত্রটি হলো, প্রথম ও শেষ কোটির সমষ্টি + জোড় কোটিগুলোর সমষ্টির চারগুণ + বিজোড় কোটিগুলোর সমষ্টির দ্বিগুণ এর সর্বমোটের এক তৃতীয়াংশ ও ভাগ দৈর্ঘ্যের 1 + বিজোড় কোটিও গুণফলের সমান হবে ক্ষেত্রটির ক্ষেত্রফল ।

 

গম্য বিন্দু হতে শিকল এবং টেপের সাহায্যে লম্ব স্থাপন প্রক্রিয়া | শিকল জরিপের পরিমাপে প্রতিবন্ধকতা অতিক্রমকরণ | সার্ভেয়িং ১
আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

 

(গ) অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশের মাধ্যমে ঃ

এতে ক্ষেত্রফল নিরূপণের জন্য অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ হিসেব করে নেয়া হয় এবং ঘেরকে সাম্যতায় আনয়নের পর ক্ষেত্রফল নিরূপণ করা হয়। এটা দু’ পদ্ধতিতে করা যায়- (১) দুই দ্রাঘিমাংশের দূরত্বের মাধ্যমে এবং (২) দুই সমান্তরাল রেখার দূরত্বের মাধ্যমে। (ঘ) স্থানাঙ্কের দূরত্বের মাধ্যমে ঃ এ পদ্ধতিতে সব বিন্দুগুলোর স্থানাঙ্ক নির্ণয় করে ক্ষেত্রফল নির্ণয় করা হয়। সকল ক্ষেত্রেই অফসেট এর মান শূন্য হলেও তা হিসাবের আওতাভুক্ত হবে।

 

আরও দেখুন:

Leave a Comment