ক্লিনোমিটারের সাহায্যে উন্নতি কোণ ও অবনতি কোণ মাপার প্রক্রিয়া | ছোটখাটো যন্ত্রপাতি | সার্ভেয়িং ১

ক্লিনোমিটারের সাহায্যে উন্নতি কোণ ও অবনতি কোণ মাপার প্রক্রিয়া | ছোটখাটো যন্ত্রপাতি | সার্ভেয়িং ১ , ব্যবহার করা হয়। যন্ত্রটির আই ভেন ছিদ্র ও অবজেক্ট ভেনের ক্রস হেয়ার বরাবর দৃষ্টিরেখায় ভূমিতে স্থাপিত সমান উচ্চতার (ভূপৃষ্ঠ হতে সমান উচ্চতা) দণ্ডের শীর্ষবিন্দু বরাবর উঁচু হতে নিচের দিকে তাকালে ওলনের সুতা ০ ডিগ্রির সামনে যত ডিগ্রি বরাবর অবস্থান করবে অবনতি কোণের পরিমাণ তত ডিগ্রি। অর্থাৎ নিম্নমুখী ঢালের পরিমাণ তত ডিগ্রি। আবার একই নিয়মে নিচু হতে উপরের দিকে তাকালে ওলনের সুতা ০ ডিগ্রির পিছনের দিকে যত ডিগ্রিতে অবস্থান করবে, উন্নতি কোণ তত ডিগ্রি। অর্থাৎ ঊর্ধ্বমুখী ঢালের পরিমাণ তত ডিগ্রি ।

 

ক্লিনোমিটারের সাহায্যে উন্নতি কোণ ও অবনতি কোণ মাপার প্রক্রিয়া

 

প্রিজম স্কয়ার (Prism Square) ঃ অপটিক্যাল স্কয়ারের ন্যায় একই নীতিতে প্রিজম স্কয়ার তৈরি। তবে এতে দর্পণের পরিবর্তে 45° অন্তর্ভুক্ত কোণে নির্মিত দুই প্রতিফলন পৃষ্ঠের (I ও H পৃষ্ঠ) পঞ্চভুজাকৃতির প্রিজম ব্যবহার করা হয় (চিত্র ১৩.৬)। এতে শিকল রেখায় স্থাপিত রেঞ্জিং রডকে সরাসরি দেখার জন্য প্রিজমের উপরে পিপ হোল (Peep hole) থাকে। এটিও দেখতে বৃত্তাকার বক্সের মতো। এটি অপটিক্যাল স্কয়ার, এর মতোই ব্যবহার করা হয় এবং সমকোণ উৎপন্ন বিন্দুতে শিকল রেখার রেঞ্জিং রড ও বাইরের বিন্দুর রেঞ্জিং বড়ের প্রতিফলিত প্রতিবিম্ব একই সরল রেখায় দেখায়। এর নিখুঁতির মাত্রা প্রতিফলক পৃষ্ঠদ্বয়ে অন্তর্ভুক্ত কৌণিক নিখুঁতির উপর নির্ভর করে। এটি অপটিক্যাল স্কয়ার হতে অধিক নিখুঁত এবং সমন্বয়নের দরকার হয় না বা সমন্বয়নের সুযোগও নেই।

 

সেক্সট্যান্ট (Sextant) : সেক্সট্যান্ট একটি কোণ মাপার যন্ত্র। এর সাহায্যে অনুভূমিক ও উল্লম্ব কোণ মাপা যায়। এতে স্বতন্ত্র দুটি দর্পণ থাকে এবং দুটি বস্তুকে সমসময়ে পর্যবেক্ষণ করে এদের অন্তর্ভুক্ত কোণ পরিমাপ করা যায়। সেক্সট্যান্ট আলোকীয় নীতি “যখন কোনো আলোকরশ্মি পর্যায়ক্রমে একই তলে দুটি দর্পণে পতিত হবে, তখন প্রথম আপতিত রশ্মি ও শেষ প্রতিফলিত রশ্মির অন্তর্ভুক্ত কোনো দর্পণদ্বয়ের অন্তর্ভুক্ত কোণের দ্বিগুণের সমান” এর উপর ভিত্তি করে তৈরি। সেক্সট্যান্ট দু’ধরনের, যথা-

(i) নটিক্যাল সেক্সট্যান্ট (Nautical sextant)

(ii) বক্স সেক্সট্যান্ট (Box sextant)।

 

 

(i) নটিক্যাল সেক্সট্যান্ট ঃ এটি সাধারণত নৌ ও জ্যোতিষীয় ক্ষেত্রে কৌণিক পরিমাপে ব্যবহৃত হয় এবং এগুলো নৌকা ও জল জাহাজ হতেও ব্যবহার করা যায়। এগুলোর সাহায্য দুরবিন হতে ভিন্ন এলিভেশনের দুটি বস্তুর কৌণিক পরিমাপ সহজেই নেয়া যায়।

 

 (ii) বক্স সেক্সট্যান্ট’ ঃ এটি একটি কোণ মাপার পকেট ইনস্ট্রুমেন্ট। এটা দেখতে অনেকটা গোলাকার কৌটার মতো। এর ব্যাস 75 মিলিমিটার এবং উচ্চতা 40 মিলিমিটার। এর ঢাকনা সরিয়ে স্ক্রু দিয়ে আটকে রাখলে পর্যবেক্ষণ কালে হাতল হিসাবে ব্যবহার করা যায় (চিত্র ঃ ১৩.৭ ক)। এতে একটি দিকচক্রবাল আয়না (H) থাকে, যার উপরে অর্ধেক পারাহীন এবং নিচের অর্ধাংশ পারামণ্ডিত। তা ছাড়া এতে সম্পূর্ণ পারামণ্ডিত সূচক দর্পণ (I) সূচক বাহুর এক প্রান্তে সংযুক্ত থাকে এবং সূচক বাহুর অপর প্রান্তে পারামণ্ডিত ভাগচক্রের (graduated arc) 0° হতে 140° পর্যন্ত সঞ্চরণক্ষম ভার্নিয়ার সংযুক্ত থাকে। ভাগচক্রের ন্যূনতম পাঠ মান 30′ ।

ভার্নিয়ার পাঠ সূক্ষ্ম ও নিখুঁতভাবে গ্রহণের জন্য এর উপর ম্যাগনিফাইং গ্লাস লাগানো থাকে। এতে সংযুক্ত ‘মিল হেডেড’ মাইক্রোমিটার ক্রুর সাহায্যে সূচক বাহু ঘুরানোর ব্যবস্থা থাকে। এতে দিকচক্রবাল গ্লাসের উল্টো দিকে ‘আই হোল’ (eye hole) থাকে এবং দূরবর্তী টার্গেট পরিদৃশ্যতার জন্য আই হোলে ছোট দুরবিন থাকতে পারে। সূচক গ্লাসে আলোকরশ্মি পতিত হওয়ার জন্য ছিদ্র (Slot) থাকে এবং অত্যুজ্জ্বল তীব্র আলোকরশ্মি বা সূর্য পর্যবেক্ষণের ক্ষেত্রে আলোর তীব্রতা হ্রাসে এক জোড়া রঙিন কাঁচ থাকে। যন্ত্রের সমন্বয়ের জন্য ‘অ্যাডজাস্টিং কী’ ব্যবহৃত হয়।

আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

ব্যবহার প্রক্রিয়া ঃ কোণের পরিমাণ গ্রহণকালে যন্ত্রটি এক হাতে ধরে ‘আই হোলের’ ভিতর দিয়ে দিকচক্রবাল গ্লাস (H) এর পারাহীন অংশ দিয়ে সরাসরি ঈন্সিত বস্তু (B) দেখতে হবে (চিত্র ঃ ১৩.৭ খ) এবং অপর হাত দিয়ে যন্ত্রের উপরের সূচক বাহুকে মিল হেডেড মাইক্রোমিটার স্ক্রুর সাহায্যে ঘুরিয়ে এমন অবস্থানে আনতে হবে যেন অপর বস্তুর (C) প্রতিবিম্ব (দিকচক্রবাল গ্লাসের পারামণ্ডিত অংশে) প্রথমোক্ত বস্তুকে (B) ছেদ করে। যেহেতু ভাগচক্রের দাগগুলো এমনভাবে করা যাতে দর্পণদ্বয়ের অন্তর্ভুক্ত কোণ দ্বিগুণ পড়া হয় তাই ভার্নিয়ার সরাসরি বস্তুদ্বয়ের (B ও C) অন্তর্ভুক্ত কোণের সমান পাঠ প্রদান করে ।

দেখাও যে, সেক্সট্যান্ট এর আই হোলে পর্যবেক্ষিত বস্তুদ্বয়ের সৃষ্ট অন্তর্ভুক্ত কোণ দর্পণদ্বয় কর্তৃক সৃষ্ট অন্তঃস্থ কোণের দ্বিগুণের সমান অথবা দর্পণদ্বয়ের অন্তর্ভুক্ত কোণ পর্যবেক্ষিত বস্তুদ্বয়ের সৃষ্ট অন্তর্ভুক্ত কোণের অর্ধেক।

 

 

প্রমাণ ঃ (চিত্র ১৩.৭ খ)

ত্রিভুজ MOP হতে,

বহিস্থ কোণ CMO = 2a = 8 + 2B

ত্রিভুজ MQO হতে,

EMO = 90° + α= (90+ B) + y…………. (ii)

সমীকরণ (i) হতে,

8 = 2a – 2B = 2 (a – B ) …

সমীকরণ (ii) হতে,

Y= a- B

সমীকরণ (iii) ও (iv) হতে,

(iv)

8 = 2Y : _8 (প্রমাণিত)

আরও দেখুন:

এবনি লেভেলের সাহায্যে উন্নতি ও অবনতি কোণ পরিমাপকরণ প্রক্রিয়া | ছোটখাটো যন্ত্রপাতি | সার্ভেয়িং ১

এবনি লেভেলের সাহায্যে উন্নতি ও অবনতি কোণ পরিমাপকরণ প্রক্রিয়া | ছোটখাটো যন্ত্রপাতি | সার্ভেয়িং ১ ,এবনি লেভেল বহুল ব্যবহৃত এক ধরনের ক্লিনোমিটার। এটা হালকা তবে বেশ মজবুত। সূক্ষ্ম কাজের জন্য এটা তেমন ব্যবহৃত হয় না তবে খসড়া কাজের জন্য বেশ উপযোগী। এটা একটা হাত যন্ত্র । সাধারণত রাস্তার ঢালের উন্নতি বা অবনতি কোণ পরিমাপে, গ্রেড কন্টুর এবং ভূমির ঢাল নির্ধারণে এ যন্ত্রটি ব্যবহৃত হয়।

 

 

এবনি লেভেলের সাহায্যে উন্নতি ও অবনতি কোণ পরিমাপকরণ প্রক্রিয়া

নিচে এবনি লেভেলের সাহায্যে উন্নতি ও অবনতি কোণ (উল্লম্ব কোণ) মাপার পদ্ধতি দেয়া হলো :

১। প্রথমে যন্ত্রটিকে ঢালের এক প্রান্তে চক্ষু উচ্চতায় ধরে দুরবিনের ভিতর দিয়ে তাকিয়ে ঢালের অপর প্রান্তে উল্লম্বভাবে পোঁতা চক্ষু উচ্চতায় চিহ্নিত দাগকে দুরবিনের ‘ক্রস হেয়ারে’ ছেদ করাতে হবে।

২। যেহেতু দৃষ্টিরেখা ঢালু (উপরে দিকে বা নিচের দিকে)। তাই বাবল তার দৌড়ের কেন্দ্রে থাকবে না বিধায় মিলড স্কু’ (Milled screw) ঘুরায়ে বাবলকে তার দৌড়ের কেন্দ্রে আনতে হবে।

 

আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

 

৩। যখন দৃষ্টিরেখা দুরবিনের ক্রস হেয়ারে অপর প্রান্তের চক্ষু উচ্চতার দাগকে ছেদ করবে এবং বাবল তার দৌড়ের কেন্দ্রে থাকবে তখন এ অবস্থায় ভার্নিয়ারের মাধ্যমে কোণের পাঠ গ্রহণ করতে হবে। এ কোণের পরিমাণই হবে (যদি বস্তু নিচে থাকে তবে অবনতি কোণ আর যদি উপরে থাকে তবে উন্নতি কোণ) উল্লম্ব কোণ । উন্নতি কোণ পরিমাপের চিত্র দেখানো হলো। (চিত্র ঃ ১৩.২ এবনি লেভেলের অনুভূমিক অবস্থান এবং চিত্র ঃ ১৩.৩ উন্নতি কোনো পরিমাপ)

ক্লিনোমিটার (Clinometer) ঃ চিত্রে একটি সাধারণ ক্লিনোমিটার দেখানো হয়েছে। এটি দেখতে অনেকটা জ্যামিতি বক্সের কোণ মান যন্ত্র বা চাঁদার মতো। এটির কেন্দ্রে একটি হালকা ওজনের ওলন ঝুলানো থাকে। এটির দু’প্রান্তে দুটি ভেন (Vane) সংযুক্ত থাকে— একটি আই ভেন (a) এবং অপরটি অবজেক্ট ভেন (b)। দৃষ্টিরেখা (ab) অনুভূমিক অবস্থায় থাকাকালে ওলনের সুতা ভাগচক্রের শূন্য বরাবর ঝুলতে থাকে । ভাগচক্রকে শূন্যের উভয় পার্শ্বে ডিগ্রিতে (10 ডিগ্রি, 20 ডিগ্রি….) দাগকাটা থাকে ।

 

 

-ক্লিনোমিটার ঢাল কোণ (উন্নতি কোণ ও অবনতি কোণ) মাপার কাজে ব্যবহার করা যায়। যদিও এর সাহায্যে কোণ নিখুঁতভাবে মাপা যায় না তবে খসড়া কাজে ব্যবহারের জন্য মোটামুটি ভালো ফলাফল পাওয়া যায় ।

আরও দেখুন:

পেন্টাগ্রাফের সাহায্যে নক্শা ছোট এবং বড়করণ প্রক্রিয়া | ছোটখাটো যন্ত্রপাতি | সার্ভেয়িং ১

পেন্টাগ্রাফের সাহায্যে নক্শা ছোট এবং বড়করণ প্রক্রিয়া | ছোটখাটো যন্ত্রপাতি | সার্ভেয়িং ১ ,মূল নক্‌শাকে যে অনুপাতে ছোট বা সংকুচিত করা হবে ফালক্রামকে লম্বা বাহুর সে স্কেলে এনে ক্ল্যাম্প করে দিতে হবে এবং পেন্সিলবিন্দুকেও অনুরূপ স্কেলে এনে ক্ল্যাম্প করতে হবে। এর পর লম্বা বাহুর ট্রেসিং বিন্দুর নিচে মূল নকশা এবং পেন্সিল বিন্দুর নিচে ড্রয়িং শিট (যাতে ছোট বা সংকুচিত নক্‌শা করা হবে) স্থাপন করে মূল নক্শার প্রতিটি রেখা ট্রেসড্ (Traced) করতে হবে।

 

পেন্টাগ্রাফের সাহায্যে নক্শা ছোট এবং বড়করণ প্রক্রিয়া

ফলত পেন্সিল বিন্দু ও আনুপাতিক স্কেলে নক্শার প্রতিটি রেখা অঙ্কন করতে থাকে। এভাবে নক্শার সংকোচন করা হয় । নক্শা পরিবর্ধনের ক্ষেত্রে ট্রেসিং বিন্দুতে পেন্সিল এবং পেন্সিল বিন্দুতে ট্রেসার লাগাতে হবে এবং পেন্সিল বিন্দুতে মূল নক্‌শা

স্থাপন করতে হবে এবং ট্রেসিং বিন্দুর নিচে পরিবর্ধিত নক্শা অঙ্কনের জন্য ড্রয়িং শিট দিতে হবে। যে অনুপাতে নক্শা পরিবর্ধিত করতে হবে, ফালক্রামের সূচক ও পেন্সিল বিন্দু সে স্কেলে ক্ল্যাম্প করতে হবে এবং মূল নক্শা ট্রেস করলে ড্রয়িং শিটে বর্ধিত স্কেলে নক্‌শা অঙ্কিত হতে থাকবে। এভাবে পেন্টাগ্রাফের সাহায্যে নক্শার পরিবর্ধন করা হয় । প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, যন্ত্রটি প্রধানত নক্শা সংকোচনের ক্ষেত্রেই বিশেষভাবে ব্যবহৃত হয়।

আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

এ যন্ত্রটি নক্শা পরিবর্ধনে সন্তোষজনক ফলাফল দেয় না। উভয় ক্ষেত্রে অবশ্যই লক্ষণীয় যে, কোনোক্রমেই নক্‌শা বা ড্রয়িং শিট নড়াচড়া করতে পারবে না। পেন্সিলটি কাগজ থেকে উঁচু করে ধরার জন্য পেন্সিল বিন্দু থেকে শুরু করে যন্ত্রটিকে ঘিরে ট্রেসিং পর্যন্ত একটা সরু তার লাগাতে হবে। এটা না করলে নক্‌শায় অবাঞ্ছিত পেন্সিলের দাগ পড়বে।

 

 

মধ্যযুগীয় ইউরোপে, সীমানা মারলে একটি গ্রাম বা প্যারিশের সীমানা বজায় থাকত। এটি ছিল সীমানার একটি সাম্প্রদায়িক স্মৃতি স্থাপনের জন্য একদল বাসিন্দাকে জড়ো করা এবং প্যারিশ বা গ্রামের চারপাশে ঘুরে বেড়ানোর অভ্যাস। স্মৃতি যতদিন সম্ভব স্থায়ী হয় তা নিশ্চিত করার জন্য অল্প বয়স্ক ছেলেদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল।

আরও দেখুন:

একর কম্বের ব্যবহার | ছোটখাটো যন্ত্রপাতি | সার্ভেয়িং ১

একর কম্বের ব্যবহার | ছোটখাটো যন্ত্রপাতি | সার্ভেয়িং ১ , একর কম্ব নকশার ক্ষেত্রফল একরে নির্ণয় করার জন্য ব্যবহার করা হয়। এর সাহায্যে নকশার যে-কোনো দাগের (Plots ক্ষেত্রফল সহজেই একরে নির্ণয় করা যায় ।

 

 

একর কম্বের ব্যবহার

ডাচ গণিতবিদ উইলেব্রোর্ড স্নেলিয়াস (ওরফে স্নেল ভ্যান রয়েন) ত্রিভুজকরণের আধুনিক পদ্ধতিগত ব্যবহার চালু করেছিলেন। 1615 সালে তিনি আলকমার থেকে ব্রেডা পর্যন্ত প্রায় 72 মাইল (116 কিমি) দূরত্ব জরিপ করেন। তিনি এই দূরত্বকে 3.5% অবমূল্যায়ন করেছেন। সমীক্ষাটি ছিল চতুর্ভুজের একটি শৃঙ্খল যাতে মোট 33টি ত্রিভুজ রয়েছে। স্নেল দেখিয়েছেন কিভাবে প্ল্যানার সূত্রগুলো পৃথিবীর বক্রতার জন্য সংশোধন করা যেতে পারে। তিনি অজানা বিন্দুতে শীর্ষবিন্দুগুলির মধ্যে নিক্ষিপ্ত কোণগুলি ব্যবহার করে ত্রিভুজের অভ্যন্তরে একটি বিন্দুর অবস্থান কীভাবে পুনরুদ্ধার করতে বা গণনা করতে হয় তাও তিনি দেখিয়েছিলেন।

 

 

এগুলি কম্পাসের উপর নির্ভরশীল শীর্ষবিন্দুগুলির বিয়ারিংয়ের চেয়ে আরও সঠিকভাবে পরিমাপ করা যেতে পারে। তার কাজ কন্ট্রোল পয়েন্টগুলির একটি প্রাথমিক নেটওয়ার্ক জরিপ করার এবং প্রাথমিক নেটওয়ার্কের ভিতরে সহায়ক পয়েন্টগুলি সনাক্ত করার ধারণা প্রতিষ্ঠা করে। 1733 থেকে 1740 সালের মধ্যে, জ্যাক ক্যাসিনি এবং তার ছেলে সিজার ফ্রান্সের প্রথম ত্রিভুজ গঠন করেন। তারা মেরিডিয়ান আর্কের পুনঃ-জরিপ অন্তর্ভুক্ত করে, যার ফলে 1745 সালে কঠোর নীতিতে নির্মিত ফ্রান্সের প্রথম মানচিত্র প্রকাশিত হয়। এই সময়ের মধ্যে স্থানীয় মানচিত্র তৈরির জন্য ত্রিভুজ পদ্ধতিগুলি ভালভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

 

আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

মানুষ প্রথম বড় কাঠামো তৈরি করার পর থেকে জরিপ করা হয়েছে। প্রাচীন মিশরে, নীল নদের বার্ষিক বন্যার পরে সীমানা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে একটি দড়ি স্ট্রেচার সরল জ্যামিতি ব্যবহার করত। গিজার গ্রেট পিরামিডের প্রায় নিখুঁত বর্গক্ষেত্র এবং উত্তর-দক্ষিণ অভিযোজন, গ. 2700 খ্রিস্টপূর্বাব্দ, মিশরীয়দের জরিপ করার আদেশ নিশ্চিত করে। গ্রোমা যন্ত্রের উৎপত্তি মেসোপটেমিয়ায় (খ্রিস্টপূর্ব ১ম সহস্রাব্দের প্রথম দিকে)। স্টোনহেঞ্জে প্রাগৈতিহাসিক স্মৃতিস্তম্ভ (আনুমানিক 2500 খ্রিস্টপূর্ব) প্রাগৈতিহাসিক জরিপকারীরা খুঁটি এবং দড়ি জ্যামিতি ব্যবহার করে স্থাপন করেছিলেন।

আরও দেখুনঃ

পেন্টাগ্রাফের ব্যবহার | ছোটখাটো যন্ত্রপাতি | সার্ভেয়িং ১

পেন্টাগ্রাফের ব্যবহার | ছোটখাটো যন্ত্রপাতি | সার্ভেয়িং ১ ,অবিকল নক্শা তৈরিকরণ, নক্শার সংকোচন ও পরিবর্ধনের জন্য পেন্টাগ্রাফ ব্যবহৃত হয়। নিম্নে পেন্টাগ্রাফের চিত্রসহ ব্যবহার পদ্ধতি দেয়া হলো :

পেন্টাগ্রাফের ব্যবহার

 

 

এতে দুটি লম্বা বাহুর (AB ও AD) দু প্রান্ত কব্জার সাহায্যে এক বিন্দুতে (A) সংযুক্ত থাকে এবং বাহুদ্বয় রোলারের উপর স্থাপিত। দুটি ছোট বাহুর (EF ও FG) দু প্রান্ত এক বিন্দুতে (F) কব্জায় আটকানো সামান্তরিকটি যন্ত্রটির যে-কোনো অবস্থানে সামান্তরিকের ধর্ম CD) দু বিন্দুতে (E ও C) সংযোগ করে দেয়া হয় যেন (AEFG) সৃষ্ট সামারে এবং এদের অপর দু প্রান্ত লম্বা বাহুদ্বয়ের (AB ও অক্ষুন্ন রাখে।

 

 

একটি লম্বা বাহু (AD) ও একটি ছোট বাহু (EF) তে 182, 183, 184 ইত্যাদি অনুপাতের দাগকাটা থাকে এবং লম্বা বাহুটিতে (AD) সূচক রেখা ও উল্লম্ব অক্ষ (Q) এবং ছোট বাহুটিতে সূচক রেখা ও পেন্সিল আটকানোর ব্যবস্থা (P) সম্বলিত সঞ্চালনশীল ফাঁপা ফ্রেম থাকে, যা প্রয়োজনীয় স্থানে ক্লাম্পিং ক্রুর সাহায্যে আটকানো যায়। যন্ত্রটি নির্দিষ্ট স্থানে রাখার জন্য উল্লম্ব · অক্ষে (Q) ওজন লাগানো থাকে। এটাকে ফালক্রাম (Fulcrum) বলা হয়। ফালক্রামকে (Q) স্থির রেখে পুরো যন্ত্রটি নড়াচড়া করা যায়। ছোট বাহুটির (EF) সূচক রেখার যে-কোনো ঈপ্সিত স্কেলে পেন্সিল বিন্দু (P) স্থানান্তর করা যায়।

 

 

অপর লম্বা বাহুর (AB) প্রান্তে একটি ট্রেসিং বিন্দু (B) থাকে। যন্ত্রটির যে-কোনো অবস্থানে উল্লম্ব অক্ষ (Q), পেন্সিল বিন্দু (P) এবং ট্রেসিং বিন্দু (B) একই সরল রেখায় থাকে। মূল নক্শা ট্রেসিং বিন্দুর নিচে রেখে ট্রেসড (Traced) করলে পেন্সিল বিন্দু (P) নড়াচড়া আরম্ভ করে কিন্তু উল্লম্ব অক্ষ (Q) নড়াচড়া করে না। যদি ট্রেসিং বিন্দু (B) সরে (B) অবস্থানে আসে তবে পেন্সিল বিন্দু (P) সরে (P)-এ আসে। উভয়ের সরার পরিমাণের অনুপাত মূল নক্শা সংকোচনের অনুপাতের সমান। যদি নক্শাকে পরিবর্ধনের ইচ্ছা করা হয় তবে ট্রেসিং বিন্দুকে (B) পেন্সিল এবং পেন্সিল বিন্দুকে (P) ট্রেসিং বিন্দু করে মূল নক্শা ট্রেস করতে হবে।

 

আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

 

নক্শা সংকোচন বা পরিবর্ধনের ক্ষেত্রে Q ও P এর স্কেল একই অনুপাতে রেখে ক্ল্যাম্প করতে হয়। পেন্সিল বিন্দুতে ট্রেসার ও ট্রেসিং বিন্দুতে পেন্সিল লাগানের ব্যবস্থা থাকে। ফলে নক্শা পরিবর্ধিত করতে হলে পেন্সিল বিন্দুতে ট্রেসার ও ট্রেসিং বিন্দুতে পেন্সিল লাগাতে হয় । এভাবে পেন্টাগ্রাফ ব্যবহার করা হয়।

আরও দেখুন:

প্লেনিমিটারের ব্যবহার | ছোটখাটো যন্ত্রপাতি | সার্ভেয়িং ১

প্লেনিমিটারের ব্যবহার | ছোটখাটো যন্ত্রপাতি | সার্ভেয়িং ১ ,প্রধান প্রধান জরিপ যন্ত্রপাতি ছাড়াও প্লেনিমিটার, পেন্টাগ্রাফ, ক্লিনোমিটার, এবনি লেভেল ইত্যাদি সরাসরি জরিপ কাজে নকশা প্রণয়নে, নকশা পরিবর্ধন ও সংকোচনে, ক্ষেত্রফল নিরূপণে ইত্যাদি কাজে ব্যবহৃত হয়। এগুলোকে ছোটখাটো জরিপ যন্ত্রপাতি (Small survey instruments) বলা হয়ে থাকে। প্লেনিমিটার নক্শা বা মানচিত্রের ক্ষেত্রফল যান্ত্রিক উপায়ে নিখুঁতভাবে নির্ণয় করার জন্য ব্যবহৃত হয়। বিশেষ করে নক্শায় আঁকাবাঁকা সীমানায় বেষ্টিত ক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল নির্ণয়করণে এটা খুবই উপযোগী। তা ছাড়া আধুনিক ডিজিটাল প্লেনিমিটারে, রেখা দৈর্ঘ্য, বৃত্তের ব্যাস, কোনো ক্ষেত্রের পরিসীমা, ইত্যাদি পরিমাপ করা যায়। এগুলোর কোনো কোনোটিতে ফলাফল সরাসরি প্রদর্শিত হয় আবার কোনো কোনোটিতে ফলাফল মুদ্রিত অবস্থায় পাওয়া যায় ।

 

প্লেনিমিটারের ব্যবহার

রোমানরা ভূমি জরিপকে পেশা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল। তারা মৌলিক পরিমাপ প্রতিষ্ঠা করেছিল যার অধীনে রোমান সাম্রাজ্য বিভক্ত হয়েছিল, যেমন বিজিত জমির ট্যাক্স রেজিস্টার (300 খ্রি.)। রোমান জরিপকারীরা গ্রোমাটিসি নামে পরিচিত ছিলেন।

 

 

18 শতকে, জরিপ করার জন্য আধুনিক কৌশল এবং যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা শুরু হয়। জেসি রামসডেন 1787 সালে প্রথম নির্ভুল থিওডোলাইট প্রবর্তন করেন। এটি ছিল অনুভূমিক এবং উল্লম্ব সমতলগুলিতে কোণ পরিমাপের একটি যন্ত্র। তিনি তার নিজের ডিজাইনের একটি সঠিক বিভাজক ইঞ্জিন ব্যবহার করে তার মহান থিওডোলাইট তৈরি করেছিলেন। র‍্যামসডেনের থিওডোলাইট যন্ত্রটির নির্ভুলতার ক্ষেত্রে একটি দুর্দান্ত পদক্ষেপের প্রতিনিধিত্ব করে। 1640 সালে উইলিয়াম গ্যাসকোইন একটি যন্ত্র উদ্ভাবন করেন যা একটি টার্গেট ডিভাইস হিসাবে একটি ইনস্টল করা ক্রসহেয়ার সহ একটি টেলিস্কোপ ব্যবহার করে। জেমস ওয়াট 1771 সালে দূরত্ব পরিমাপের জন্য একটি অপটিক্যাল মিটার তৈরি করেছিলেন; এটি সমান্তরাল কোণ পরিমাপ করে যেখান থেকে একটি বিন্দুর দূরত্ব নির্ণয় করা যায়।

 

আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

ডাচ গণিতবিদ উইলেব্রোর্ড স্নেলিয়াস (ওরফে স্নেল ভ্যান রয়েন) ত্রিভুজকরণের আধুনিক পদ্ধতিগত ব্যবহার চালু করেছিলেন। 1615 সালে তিনি আলকমার থেকে ব্রেডা পর্যন্ত প্রায় 72 মাইল (116 কিমি) দূরত্ব জরিপ করেন। তিনি এই দূরত্বকে 3.5% অবমূল্যায়ন করেছেন।

আরও দেখুন:

একর কম্বের সাহায্যে নকশার ক্ষেত্রফল নিরূপণ | নক্শার ক্ষেত্রফল নিরূপণ | সার্ভেয়িং ১

একর কম্বের সাহায্যে নকশার ক্ষেত্রফল নিরূপণ | নক্শার ক্ষেত্রফল নিরূপণ | সার্ভেয়িং ১ ,উদাহরণ-১। নিচের নকশাটির ক্ষেত্রফল একর কম্বের সাহায্যে নিরূপণ কর। প্রতি বর্গক্ষেত্র 1 একরের সমান । (চিত্র ঃ ১২.৯) এখানে পাঁচটি পূর্ণ বর্গক্ষেত্র এবং V ও X মিলে 2টি বর্গক্ষেত্র এবং P ও Q মিলে একটি বর্গক্ষেত্র, (1) নং বর্গক্ষেত্রের ডানে ধরা-ছাড়া প্রক্রিয়ায় = 1 বর্গক্ষেত্র, (1) নং বর্গক্ষেত্রের বামে – বর্গক্ষেত্র মোট ৪½ বর্গক্ষেত্র। যদি প্রতি বর্গক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল 1 একর হয় তবে নকশার ক্ষেত্রফল = = 82 x 1 = 824 একর ।

একর কম্বের সাহায্যে নকশার ক্ষেত্রফল নিরূপণ

 

ডাচ গণিতবিদ উইলেব্রোর্ড স্নেলিয়াস (ওরফে স্নেল ভ্যান রয়েন) ত্রিভুজকরণের আধুনিক পদ্ধতিগত ব্যবহার চালু করেছিলেন। 1615 সালে তিনি আলকমার থেকে ব্রেডা পর্যন্ত প্রায় 72 মাইল (116 কিমি) দূরত্ব জরিপ করেন। তিনি এই দূরত্বকে 3.5% অবমূল্যায়ন করেছেন। সমীক্ষাটি ছিল চতুর্ভুজের একটি শৃঙ্খল যাতে মোট 33টি ত্রিভুজ রয়েছে। স্নেল দেখিয়েছেন কিভাবে প্ল্যানার সূত্রগুলো পৃথিবীর বক্রতার জন্য সংশোধন করা যেতে পারে। তিনি অজানা বিন্দুতে শীর্ষবিন্দুগুলির মধ্যে নিক্ষিপ্ত কোণগুলি ব্যবহার করে ত্রিভুজের অভ্যন্তরে একটি বিন্দুর অবস্থান কীভাবে পুনরুদ্ধার করতে বা গণনা করতে হয় তাও তিনি দেখিয়েছিলেন।

 

 

এগুলি কম্পাসের উপর নির্ভরশীল শীর্ষবিন্দুগুলির বিয়ারিংয়ের চেয়ে আরও সঠিকভাবে পরিমাপ করা যেতে পারে। তার কাজ কন্ট্রোল পয়েন্টগুলির একটি প্রাথমিক নেটওয়ার্ক জরিপ করার এবং প্রাথমিক নেটওয়ার্কের ভিতরে সহায়ক পয়েন্টগুলি সনাক্ত করার ধারণা প্রতিষ্ঠা করে। 1733 থেকে 1740 সালের মধ্যে, জ্যাক ক্যাসিনি এবং তার ছেলে সিজার ফ্রান্সের প্রথম ত্রিভুজ গঠন করেন। তারা মেরিডিয়ান আর্কের পুনঃ-জরিপ অন্তর্ভুক্ত করে, যার ফলে 1745 সালে কঠোর নীতিতে নির্মিত ফ্রান্সের প্রথম মানচিত্র প্রকাশিত হয়। এই সময়ের মধ্যে স্থানীয় মানচিত্র তৈরির জন্য ত্রিভুজ পদ্ধতিগুলি ভালভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

 

আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

মানুষ প্রথম বড় কাঠামো তৈরি করার পর থেকে জরিপ করা হয়েছে। প্রাচীন মিশরে, নীল নদের বার্ষিক বন্যার পরে সীমানা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে একটি দড়ি স্ট্রেচার সরল জ্যামিতি ব্যবহার করত। গিজার গ্রেট পিরামিডের প্রায় নিখুঁত বর্গক্ষেত্র এবং উত্তর-দক্ষিণ অভিযোজন, গ. 2700 খ্রিস্টপূর্বাব্দ, মিশরীয়দের জরিপ করার আদেশ নিশ্চিত করে।

আরও দেখুন:

একর কম্ব এর সাহায্যে নক্শার ক্ষেত্রফল নিরূপণ পদ্ধতি | নক্শার ক্ষেত্রফল নিরূপণ | সার্ভেয়িং ১

একর কম্ব এর সাহায্যে নক্শার ক্ষেত্রফল নিরূপণ পদ্ধতি | নক্শার ক্ষেত্রফল নিরূপণ | সার্ভেয়িং ১ ,একর কম্ব (Acre Comb) কম পুরুত্বের পিতল বা ইলেকট্রামের পাত বা হালকা বোর্ডের তৈরি আয়তাকার ফ্রেমবিশেষ। সাধারণত উপরোক্ত ধাতুর হালকা পাত বা হালকা বোর্ডের মাঝখানের আয়তাকার অংশ কেটে এগুলো তৈরি করা হয় এবং চারদিকের ফ্রেমে নকশার স্কেলের সাথে সামঞ্জস্য রেখে সমদূরত্বে (সচরাচর স্কেল অনুযায়ী । চেইন দূরত্বে) ছিদ্র করে নেয়া হয় যেন এটার সাহায্যে নকশার বা কোনো দাগের (Plot) ক্ষেত্রফল একরে নির্ণয় করতে তেমন হিসেব নিকাশের দরকার না পড়ে।

 

একর কম্ব এর সাহায্যে নক্শার ক্ষেত্রফল নিরূপণ পদ্ধতি

এতে বিপরীত ফ্রেমের সমদূরত্বের ছিদ্রদ্বয়ে সূক্ষ্ম তার বা সুতা টান টান করে বাঁধা হয়। ফলে পুরো ফাঁকা অংশটি কতগুলো বর্গক্ষেত্রে বিভক্ত হয়। এটাকে দেখতে অনেকটা চিরুনি সদৃশ মনে হয়। তাই এটাকে একর কম্ব বলা হয়। নকশার কোনো দাগের ক্ষেত্রফল নির্ণয়ের জন্য এটার একটি সুতা উক্ত দাগের কোনো রেখার সাথে মিলিয়ে বর্গক্ষেত্র পদ্ধতিতে ক্ষেত্রফল বের করা হয়। এটার সাহায্যে একরে ক্ষেত্রফল নির্ণয় করা হয়। এটার প্রত্যেকটি বর্গক্ষেত্র নকশার স্কেল অনুসারে নির্দিষ্ট পরিমাণ (একরে) ক্ষেত্রফলের সমান।

 

 

ধরি একর কম্বের প্রত্যকটি বর্গক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল 1 একরের সমান এবং কোনো নকশায় একটি প্লট দুটি বর্গক্ষেত্রের সমান। অতএব উক্ত প্লটটির ক্ষেত্রফল দুই একর । আবার শুধুমাত্র একমুখী সরু সুতা বা তার ব্যবহার করে ট্রাপিজিয়ামে বিভক্ত করেও এর দ্বারা ক্ষেত্রফল নিরূপণ করা যায়।

 

আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

মানুষ প্রথম বড় কাঠামো তৈরি করার পর থেকে জরিপ করা হয়েছে। প্রাচীন মিশরে, নীল নদের বার্ষিক বন্যার পরে সীমানা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে একটি দড়ি স্ট্রেচার সরল জ্যামিতি ব্যবহার করত। গিজার গ্রেট পিরামিডের প্রায় নিখুঁত বর্গক্ষেত্র এবং উত্তর-দক্ষিণ অভিযোজন, গ. 2700 খ্রিস্টপূর্বাব্দ, মিশরীয়দের জরিপ করার আদেশ নিশ্চিত করে। গ্রোমা যন্ত্রের উৎপত্তি মেসোপটেমিয়ায় (খ্রিস্টপূর্ব ১ম সহস্রাব্দের প্রথম দিকে)। স্টোনহেঞ্জে প্রাগৈতিহাসিক স্মৃতিস্তম্ভ (আনুমানিক 2500 খ্রিস্টপূর্ব) প্রাগৈতিহাসিক জরিপকারীরা খুঁটি এবং দড়ি জ্যামিতি ব্যবহার করে স্থাপন করেছিলেন।

আরও দেখুন:

বিশ্লেষণমূলক প্রক্রিয়ায় নকশার ক্ষেত্রফল নিরূপণ | নক্শার ক্ষেত্রফল নিরূপণ | সার্ভেয়িং ১

বিশ্লেষণমূলক প্রক্রিয়ায় নকশার ক্ষেত্রফল নিরূপণ | নক্শার ক্ষেত্রফল নিরূপণ | সার্ভেয়িং ১ ,ডাচ গণিতবিদ উইলেব্রোর্ড স্নেলিয়াস (ওরফে স্নেল ভ্যান রয়েন) ত্রিভুজকরণের আধুনিক পদ্ধতিগত ব্যবহার চালু করেছিলেন। 1615 সালে তিনি আলকমার থেকে ব্রেডা পর্যন্ত প্রায় 72 মাইল (116 কিমি) দূরত্ব জরিপ করেন। তিনি এই দূরত্বকে 3.5% অবমূল্যায়ন করেছেন। সমীক্ষাটি ছিল চতুর্ভুজের একটি শৃঙ্খল যাতে মোট 33টি ত্রিভুজ রয়েছে।

বিশ্লেষণমূলক প্রক্রিয়ায় নকশার ক্ষেত্রফল নিরূপণ | নক্শার ক্ষেত্রফল নিরূপণ | সার্ভেয়িং ১

স্নেল দেখিয়েছেন কিভাবে প্ল্যানার সূত্রগুলো পৃথিবীর বক্রতার জন্য সংশোধন করা যেতে পারে। তিনি অজানা বিন্দুতে শীর্ষবিন্দুগুলির মধ্যে নিক্ষিপ্ত কোণগুলি ব্যবহার করে ত্রিভুজের অভ্যন্তরে একটি বিন্দুর অবস্থান কীভাবে পুনরুদ্ধার করতে বা গণনা করতে হয় তাও তিনি দেখিয়েছিলেন। এগুলি কম্পাসের উপর নির্ভরশীল শীর্ষবিন্দুগুলির বিয়ারিংয়ের চেয়ে আরও সঠিকভাবে পরিমাপ করা যেতে পারে। তার কাজ কন্ট্রোল পয়েন্টগুলির একটি প্রাথমিক নেটওয়ার্ক জরিপ করার এবং প্রাথমিক নেটওয়ার্কের ভিতরে সহায়ক পয়েন্টগুলি সনাক্ত করার ধারণা প্রতিষ্ঠা করে।

 

আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

1733 থেকে 1740 সালের মধ্যে, জ্যাক ক্যাসিনি এবং তার ছেলে সিজার ফ্রান্সের প্রথম ত্রিভুজ গঠন করেন। তারা মেরিডিয়ান আর্কের পুনঃ-জরিপ অন্তর্ভুক্ত করে, যার ফলে 1745 সালে কঠোর নীতিতে নির্মিত ফ্রান্সের প্রথম মানচিত্র প্রকাশিত হয়। এই সময়ের মধ্যে স্থানীয় মানচিত্র তৈরির জন্য ত্রিভুজ পদ্ধতিগুলি ভালভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

 

 

উদাহরণ-১। নিচের নকশাটির ক্ষেত্রফল নিরূপণ কর (ত্রিভুজে বিভক্ত করে) ঃ

AB = 10 সেন্টিমিটার CF = 6 সেন্টিমিটার

ED = 8 সেন্টিমিটার

নকশায় সরাসরি মেপে পাওয়া গেল

CF ও ED রেখা AB এর উপর লম্ব।

অতএব নক্‌শার ক্ষেত্রফল = 1 = 2 × 10 × 6 + 2x – × 10 x 8 = 70 বর্গসেন্টিমিটার।

উদাহরণ-২ । নিচের নকশাটির ক্ষেত্রফল নির্ণয় কর (বর্গক্ষেত্রের মাধ্যমে) :

আরও দেখুন:

নকশার ক্ষেত্রফল নিরূপণের বিশ্লেষণমূলক প্রক্রিয়া | নক্শার ক্ষেত্রফল নিরূপণ | সার্ভেয়িং ১

নকশার ক্ষেত্রফল নিরূপণের বিশ্লেষণমূলক প্রক্রিয়া | নক্শার ক্ষেত্রফল নিরূপণ | সার্ভেয়িং ১ ,রোমানরা ভূমি জরিপকে পেশা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল। তারা মৌলিক পরিমাপ প্রতিষ্ঠা করেছিল যার অধীনে রোমান সাম্রাজ্য বিভক্ত হয়েছিল, যেমন বিজিত জমির ট্যাক্স রেজিস্টার (300 খ্রি.)।

নকশার ক্ষেত্রফল নিরূপণের বিশ্লেষণমূলক প্রক্রিয়া

নক্শা হতে ক্ষেত্রফল নিরূপণের জন্য সাধারণত নিম্নোক্ত বিশ্লেষণমূলক পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করা হয় :

(ক) ত্রিভুজে বিভক্ত ‘করে (By division into triangles)

(খ) বর্গক্ষেত্রে বিভক্ত করে (By division into squares)

(গ) সমান্তরাল ফালিতে বিভক্ত করে (By divisioin into trapezoeds)।

(ক) ত্রিভুজে বিভক্ত ‘করে ঃ

এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে নকশার ক্ষেত্রকে কতগুলো সমকোণী ত্রিভুজে বিভক্ত করা হয় এবং নকশার স্কেল অনুযায়ী ভূমি ও উচ্চতা সূক্ষ্মভাবে পরিমাপ করে ক্ষেত্রফল নিরূপণ করা হয়। যদি সীমান্ত রেখা আঁকা- বাঁকা হয় তবে ধরা-ছাড়া (Give & take system) পদ্ধতিতে সাম্যতাকরণ সরল রেখা (equalising line) টেনে স্কেলে পরিমাপ করে ক্ষেত্রফল নিরূপণ করা হয়। সর্বশেষে ক্ষেত্রফলগুলোর সমষ্টি করে মূল নকশার ক্ষেত্রফলের সাথে তুলনা করে নিতে হয়। 

 

 

(খ) বর্গক্ষেত্রে বিভক্ত করে ঃ

পদ্ধতিতে ক্ষেত্রফল নিরূপণের জন্য একটি ট্রেসিং কাগজে নকশার স্কেলে নির্দিষ্ট ক্ষেত্রফল-বিশিষ্ট সারিবদ্ধ বর্গক্ষেত্র কাঠামো আঁকতে হবে এবং ট্রেসিং কাগজটি নকশার উপর স্থাপন করে যতগুলো পূর্ণ বর্গক্ষেত্র পড়ল তার হিসেব রাখতে হবে এবং কতগুলো ধরা-ছাড়া পন্থায় পূর্ণ বর্গক্ষেত্র হিসাবে গ্রহণ করা যায় তাও আন্দাজ করে নিতে হবে। এরপর উভয়ের সমষ্টিকে স্কেল হতে প্রকৃত ক্ষেত্রফলে রূপান্তর করলে নক্শার ক্ষেত্রটির ক্ষেত্রফল পাওয়া যাবে। 

(গ) সমান্তরাল ফালিতে বিভক্ত করে ঃ

এ পদ্ধতিতে ক্ষেত্রফল নির্ণয়ের জন্য ট্রেসিং কাগজে নির্দিষ্ট দূরত্বে কতগুলো সমান্তরাল রেখা টেনে নিতে হয় এবং সমান্তরাল রেখাঙ্কিত ট্রেসিং কাগজটি নকশার উপর স্থাপন করলে পুরো নকশাখানি কতগুলো সমান্তরাল ফালিতে বিভক্ত হবে। এরপর সীমান্ত রেখায় ধরা-ছাড়া (Give & take system) নিয়মে আন্দাজ মতো সমান্তরাল রেখার উপর লম্ব রেখা টানলে কতগুলো আয়তক্ষেত্র পাওয়া যাবে। এগুলো হতে হিসেব করে (নকশার স্কেল অনুযায়ী) পুরো নকশার ক্ষেত্রফল পাওয়া যাবে।

 

আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

 

বিঃদ্রঃ যান্ত্রিক পদ্ধতিতে বিশেষ করে প্লেনিমিটারের সাহায্যে নকশা হতে ক্ষেত্রফল নিরূপণ প্রক্রিয়া পূর্বে আলোচনা করা হয়েছে ।

আরও দেখুন:

আর্কিটেকচার সাবজেক্ট, আর্কিটেকচার জব, আর্কিটেকচার বেতন, আর্কিটেকচার ডিজাইন, আর্কিটেকচার বই, আর্কিটেকচার পড়া, আর্কিটেকচার ইঞ্জিনিয়ারিং

Exit mobile version